সংবাদ শিরোনাম :
সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটিকে  অভিনন্দন জানিয়েছেন সিলেট মহানগরের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীমঙ্গলে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক শ্রীমঙ্গল থেকে অপহৃত কিশোরী গাজীপুর থেকে উদ্ধার, মূল হোতা গ্রেপ্তার শ্রীমঙ্গলে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার বন্যায় ক্ষতিগস্থ মানুষের পাশে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব ও সারথী ট্রান্সপোর্ট সিলেট সিটি প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি বাবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাগর ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল সিরাজনগর দরবার শরীফের আয়োজনে বিশাল জশনে জুলুস সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালিত গোলাপগঞ্জে অস্ত্র সহ যুবক আটক
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে দূর্নীতি –দূর্ভোগের আরেক নাম সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস!

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে দূর্নীতি –দূর্ভোগের আরেক নাম সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস!

এ এ রানা ::
সিলেট জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের (খ) শাখায় এনআইডি সংশোধনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কাগজপত্র আবেদনকারীরা দেওয়া সত্বেও সংশোধন হচ্ছে না বলে এনআইডি কার্ড প্রত্যাশীগণের অভিযোগ। ফলে দিন দিন বাড়ছে এনআইডি সংশোধন জটলা, ভোগান্তিতে বেসামাল কার্ডপ্রত্যাশিরা।

এ বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান কালে এনআইডি কার্ড প্রত্যাশীগণের অনেকের সাথে কথা হলে তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন আবেদনে সকল কাগজপত্র ডকুমেন্ট থাকা সত্ত্বেও এনআইডি সংশোধনে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার দ্বারে দ্বার ঘুরে কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। তারা বলেন, জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান যোগদানের পর থেকেই মনগড়াভাবে এনআইডি কার্ড সংশোধন কার্যক্রম এর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে এনআইডি কার্ড প্রত্যাশীগণ হয়রানীর শিকার হচ্ছেন মর্মে অভিযোগ করেছেন।

তারা আরো জানিয়েছেন নিজের আইডি কার্ড সংশোধন আবেদনের পর মাসের পর মাস দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সিনিয়র জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের (খ) শাখায় সপ্তাহে একদিন প্রতি মঙ্গলবার কর্মকর্তার নিকট আবেদনের ফটোকপি নিয়ে গণ শুনানিতে অংশ নিতে সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে লাইনে ঘণ্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে সাক্ষাৎ করিলে তাদের আবেদন বাতিল করেন কর্মকর্তা। কেউ কথা বলতে চাইলে দাপটের সহিত কথা বলে তাড়িয়ে দেন নির্বাচন কর্মকর্তা।

এদিকে সপ্তাহে মঙ্গলবার যে সকল এনআইডি কার্ড প্রত্যাশীগণ অফিসে আসেন তারা কম্পিউটার অপারেটর সুমন কর্তৃক অনুমতি পেলে যেতে পারবেন কর্মকর্তার নিকট। এর মধ্যে সাধারণ মানুষ হলে কর্মকর্তার নিকট কোনভাবে সাক্ষাতের সুযোগ হয় না।

এছাড়া প্রতি সাপ্তাহের মঙ্গলবার সকাল ৯টায় গণশুনানীতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলে দেন অপারেটর সুমন। এনআইডি কার্ড প্রত্যাশীকারীগণ মঙ্গলবার শুনানীতে অংশ নিতে কার্ড প্রত্যাশিদের সিরিয়াল নাম্বার নিতে হয়। এ সিরিয়ালের আওতায় থাকে দেড় থেকে ‌দু’শ জনের একটি তালিকা। অথচ বিভিন্ন উপজেলা থেকে এদিন তিন/চার শত এনআইডি সংশোধন প্রত্যাশাকারী অংশ নিতে আসেন তাদের সকল কাজকর্ম বাদ দিয়ে।

যে দেড়/দুশ জনকে সিরিয়াল দেওয়া হয় গণশুনানীর জন্য, তাদের মধ্যে কমিশনের চাহিদা মোতাবেক সকল কাগজপত্র দেয়ার পরও শতকরা ৯৫ জনের আবেদন বাতিল ঘোষনা করা হয়। অবশিষ্ট যারা সিরিয়াল পাননি তাদেরকে পরবর্তী মঙ্গলবার গণশুনানিতে অংশ নিতে বলা হয় সুমনের মাধ্যমে। সিরিয়ালে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে শুনানীতে অংশ নিতে না পেরে ভুক্তভোগীরা হতাশ, আর এই দাঁড়িয়ে থাকাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনআইডি সেবা প্রত্যাশিরা।

মনগড়াভাবে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা এসব হয়রানি করছেন বলেও তাদের অভিযোগ। তারা বলেন তিনি চাইলে, প্রতিদিন তাদের কাজ করতে পারতেন, এছাড়া যারা ৯ টার ভিতরে আসতে পারছে না তাদেরকে সুমন ছাড়াও অফিসের অনেকেই পরের সপ্তায় আসবেন বলে জানিয়ে দেন।

এতে করে জেলার বিভিন্ন উপজেলার অনেক দূর দূরান্ত থেকে আগত সেবাপ্রত্যাশিরা সকাল ৯টার ভিতরে আসতে না পাড়ায় বারবার হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা।

এদিকে অনুসন্ধানে নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক অনেকেই এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন অফিসের অপারেটর সুমনের নেতৃত্বে দালাল চক্রের মাধ্যমে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে এনআইডি কার্ড সংশোধন কাজ হচ্ছে। তাই কোনভাবেই অনিয়ম দুর্নীতি হয়রানি থামছেনা। এভাবেই টাকার ছড়াছড়িতে চলছে সিলেট সিনিয়র নির্বাচন অফিসের কার্যক্রম। টাকা ছাড়া কোনো এনআইডি কার্ড সংশোধন হচ্ছে না বলে গোপন তথ্য জানা গেছে।

তাছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা কর্তৃক নতুন করে নোটিশ টাঙ্গানো হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে আগামী ৬ জুন ২০২৪ পর্যন্ত এনআইডি কার্ড সংক্রান্ত গণশুনানি বন্ধ থাকিবে।

এভাবে বছরের পর বছর সিলেট জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসে ঘুরতে ঘুরতে অনেকে অভিমানে সংশোধন প্রত্যাশা ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকে বলছেন সংশোধন করতে এসে আসা যাওয়া বাবদ ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েগেছে অথচ সংশোধন হচ্ছেনা আর হওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেননা।

এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, জেলা প্রশাসক হিসেবে আমারতো জেলার সকল দপ্তরে সমন্বয় করার দায়িত্ব। কোথাও যদি কোনো অনিয়ম অসংগতি পরিলক্ষিত হয় সেইটা আমরা লোকাল লেভেলে চেষ্টা করি সমাধান করার, সেটা যদি না পারি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। যদি কারো প্রভলেম থাকে তাহলে লিখিতভাবে আমার বরাবরে কিছু যদি দেয় যাচাই-বাছাই করে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেখব। আর নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি সরাসরি নির্বাচন কমিশন হেডকোয়ার্টার থেকে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমি নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তার আগে আমি এই বিষয় জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে কথা বলব।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বারবার চেষ্টা করলেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় ঐ কর্মকর্তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন :





© All rights reserved © 2021 Holysylhet